নামাজ প্রতিটি মুসলিমের ওপর ফরজ (বাধ্যতামূলক)। নামাজ ছাড়া ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি অসম্ভব। নামাজ পাপাচার থেকে মুক্ত রাখে। স্বচ্ছ, সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন লাভ হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)
আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে সময় মতো নামাজ আদায় করতেও বলেছেন। ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের জন্য সুনিদিষ্ট সময়ের সাথেই ফরজ করা হয়েছে’। (সুরা : আন-নিসা, আয়াত: ১০৩)
যারা নামাজের বিষয়ে উদাসীন তাদেরকে সতর্ক করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, দুর্ভোগ ওই সমস্ত নামাজিদের জন্য, যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন। (সুরা : আল-মাউন, আয়াত: ৪-৫)
নামাজ না পড়লে শুধু পরকালেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও নেমে আসে অশান্তি, হতাশা, অভাব-অনটন, দুঃখ-কষ্ট। দুনিয়ার জীবনে বেনামাজির জন্য ৫টি শাস্তির কথা জানা যায় সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকে।
১. আল্লাহতায়ালা নামাজ ত্যাগকারীকে দুনিয়ার জীবনে সব কাজের বরকত থেকে মাহরূম/বঞ্চিত করেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তির আসরের সালাত কাজা হয় তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল। (মুসলিম, হাদিস : ১৩০৪)
১. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য হাদিসে বলেন, ‘নামাজ হলো ঈমানদার ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী। আবার যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিল তবে সে কুফরি করল’। (তিরমিজি : ২৬২০, আবু দাউদ: ৪৬৭৮)
২. নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির চেহারায় কোনো নূর বা উজ্জ্বলতা থাকে না।
৩. যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করে, ওই ব্যক্তি দুনিয়ার অন্যান্য ভালো কাজের কোনো পুরস্কারও পাবে না।
৪. নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির জন্য কোনো লোক দোয়া করলে, তা কাজে আসবে না।
৫. নামাজ পরিত্যাগকারী ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপেই আল্লাহতায়ালা সব সৃষ্টিজীবের কাছে ঘৃণিত। কোনো সৃষ্টিজীবই তাকে পছন্দ করবে না।
৬. ইসলামের শান্তি ও প্রতিশ্রুতি থেকে বঞ্চিত হবে। (শারহুল আকিদাতুত তাহাবি : ২৬৮)
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যত্নের সঙ্গে আদায় করবেন, কেয়ামতের দিন এ নামাজ তার জন্য আলো হবে। তার ঈমান ও ইসলামের দলিল হবে এবং তার নাজাতের ওসিলা হবে। আর যে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়মিত নামাজ আদায় করবে না, কেয়ামতের বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে নামাজ তার জন্য আলো হবে না। দলিলও হবে না এবং সে আজাব থেকে রেহাইও পাবে না। (মুসনাদে আহমদ : ৬৫৭৬)
এত এত ভয়াবহতার পরও যদি আমরা নামাজ আদায় না করি, আমাদের মতো হতভাগা আর কেউ নয়। যে আল্লাহ আমাকে এত কিছু দিয়েছেন, তার জন্য আমরা দিনের ২৪ ঘণ্টা থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজের জন্য এক ঘণ্টা দিতে পারবো না? আল্লাহ আমাদেরকে যে পঞ্চইন্দ্রিয় দিয়েছেন, শুধু এগুলোর শুকরিয়া আদায়ে সারা জীবন ইবাদত করলেও তো শুকরিয়া আদায় করা হবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নামাজের গুরুত্ব বুঝে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।