প্রশ্ন : বাসর রাতে নববধু
কিভাবে সজ্জিত হবে?
উত্তর : নববধু মেহেদি ব্যবহার
করবে, অলংকার পরবে এবং সধ্যমত
শরীয়ত সম্মত উপায়ে সেজেগুজে
উত্তম পোশাক-পরিচ্ছেদে
সজ্জিত হবে। (দেখুন- আহকামে
জিন্দেগী)
প্রশ্ন : বাসর ঘরে প্রবেশ করে
কোন নামাজ পড়বে কি না?
উত্তর : পুরুষ বাসর ঘরে প্রবেশ
করতঃ নববধুকে সহ দুই রাকআত
(শুকরানা) নামায পড়বে। (দেখুন-
শিরআতুল ইসলাম, আহকামুল ইসলাম)
প্রশ্ন : নামায পড়ার পর কি
করবে?
উত্তর : অতঃপর স্ত্রীর কপালের
উপরিস্থিত চুল ধরে বিসমিল্লাহ
বলে এই দুআ পাঠ করা সুন্নাত-
(বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা
ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া
খাইরা মা যুবিলাত আলাইহি,
ওয়া আউযুবিকা মিন শাররি হা
ওয়া শাররি মা যুবিলাত
আলাইহি) (দেখুন- ইমাদাদুল
ফাতওয়া, আহকামুল ইসলাম)
প্রশ্ন : বাসর ঘরে ঢুকে নামায ও
দোয়া পড়ার পর আর কোন আমল
আছে কি না?
উত্তর : বিভিন্ন ইসলামী
কিতাবে বাসরঘরে ঢুকে
উপরোক্ত আমলগুলো করতে বলা
হয়েছে। এরপর স্বামী-স্ত্রী
নিজেদের মত নিজেরা
পরিচিত হতে থাকবে। তবে
প্রথমে স্বামী মহর বিষয়ক
আলোচনা করে নিবে। তা পূর্ণ
আদায় না করে থাকলে স্ত্রী
থেকে সময় চেয়ে নিবে। (সূত্র-
আহকামুল ইসলাম)
প্রশ্ন : সংগম শুরু করার পূর্বে
সর্বপ্রথম কি করতে হবে?
উত্তর : সংগম শুরু করার পূর্বে সর্ব
প্রথম নিয়ত সহীহ করে নেয়া;
অর্থাৎ, এই নিয়ত করা যে, এই
হালাল পন্থায় যৌন চাহিদা
পূর্ণ করার দ্বারা হারামে
পতিত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া
যাবে, তৃপ্তি লাভ হবে এবং তার
দ্বারা কষ্ট সহিষ্ণু হওয়া যাবে,
ছওয়াব হাছেল হবে এবং সন্তান
লাভ হবে। (দেখুন- আহকামে
জিন্দেগী, আহকামুল ইসলাম)
প্রশ্ন : অনেকে বলে বাসর রাতে
স্ত্রীর সাথে সহবাস করা
অনুচিত, কথাটি ঠিক কি না?
উত্তর : না, এধরণের কথা ঠিক নয়,
এ সময় যে কোন উপভোগের জন্য
স্বামী-স্ত্রী পূর্ণ স্বাধীন।
তারা সন্তুষ্টচিত্তে যে কোন
কাজ করতে পারে। তবে অবশ্যই
প্রথমরাত হিসেবে একে অপরের
চাহিদার প্রতি লক্ষ রাখা
উচিত। (সূত্র- আহকামুল ইসলাম,
আহমাকে জিন্দেগী)
প্রশ্ন : সংগমের শুরুতে কোন
দোয়া পড়তে হবে?
উত্তর : সংগমের শুরুতে
বিসমিল্লাহ বলে কার্য শুরু করা।
তারপর শয়তান থেকে পানাহ
চাওয়া। উভয়টিকে একত্রে
এভাবে বলা যায়- বাংলা
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি
আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ
শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ
শাইতানা মা রাযাকতানা।
অর্থ : আমি আল্লাহর নাম নিয়ে এই
কাজ আরম্ভ করছি। হে আল্লাহ,
শয়তানকে আমাদের থেকে দূরে
রাখ এবং যে সন্তান তুমি
আমাদের দান করবে তার থেকেও
শয়তানকে দূরে রাখ। (দেখুন-
আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্ন : সংগমের বিশেষ কিছু আদব
ও বিধি-নিষেধ জানতে চাই?
উত্তর : সংগমের কিছু আদব ও নিয়ম
নিন্মরূপ- কোন শিশু বা পশুর
সামনে সংগমে রত না হওয়া,
পর্দা ঘেরা স্থানে সংগম করা,
সংগম শুরু করার পূর্বে শৃঙ্গার
(চুম্বন, স্তন মর্দন ইত্যাদি) করবে।
বীর্য, যৌনাঙ্গের রস ইত্যাদি
মোছার জন্য এক টুকরা কাপড়
রাখা, সংগম অবস্থায় বেশী
কথা না বলা, বীর্যের ও স্ত্রীর
যৌনাঙ্গের প্রতি দৃষ্টি না
করা, সংগম শেষে পেশাব করে
নেয়া, এক সংগমের পর পুনর্বার
সংগমে লিপ্ত হতে চাইলে
যৌনাঙ্গ এবং হাত ধুয়ে নিতে
হবে, বীর্যপাতের পরই স্বামীর
নেমে না যাওয়া বরং স্ত্রীর
উপর অপেক্ষা করা, যেন স্ত্রীও
তার খাহেশ পূর্ণ মাত্রায়
মিটিয়ে নিতে পারে,
সংগমের পর অন্ততঃ বিছুক্ষণ
ঘুমানো উত্তম, জুমুআর দিনে সংগম
করা মুস্তাহাব, সংগমের বিষয়
কারও নিকট প্রকাশ করা নেষেধ,
এটা একদিকে নির্লজ্জতা,
অন্যদিকে স্বামী/স্ত্রীর হক নষ্ট
করা, সংগম অবস্থায় স্ত্রী-
যোনীর দিকে নজর না দেয়া,
তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম,
অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে
দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির
সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম
বলতেন। (দেখুন- আহকামে
জিন্দেগী)
প্রশ্ন : কোন কোন অবস্থায় স্ত্রীর
সাথে সংগম করা যাবে না?
উত্তর : নিম্নোক্ত অবস্থায় স্ত্রীর
সাথে সংগম করা যাবে না।
স্ত্রীর মাসিক বা প্রসবকালীন
স্রাব চলা কালে। এতেকাফ
অবস্থায়। রোজার দিনের
বেলায়। এহরাম অবস্থায়। স্ত্রীর
পিছনের রাস্তা দ্বারা।
(দেখুন- স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন,
আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্ন : সংগম অবস্থায় স্ত্রীর
যোনীর দিকে নজর দেয়া
যাবে কি না
উত্তর : সংগম অবস্থায় স্ত্রী-
যোনীর দিকে নজর না দেয়া।
তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম,
অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে
দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির
সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম
বলতেন। (সূত্র - শরহুন নুকায়া ও
হিদায়া)
প্রশ্ন : বীর্যপাতের সময় কোন
দোয়া পড়বে?
উত্তর : বীর্যপাতের সময়
নিম্নোক্ত দুআটি পড়বে- বাংলা
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা তাজআল
লিশ্শাইতানি ফিমা
রাযাকতানী নাসীবান। অর্থ :
হে আল্লাহ, যে সন্তান তুমি
আমাদেরকে দান করবে তার
মধ্যে শয়তানের কোন অংশ রেখ
না। (দেখুন- আহকামে
জিন্দেগী)
প্রশ্ন : সংগম অবস্থায় স্ত্রীর
যোনী স্বামী চোষতে
পারবে কি না? এবং স্বামীর
লিঙ্গ স্ত্রী চোষতে পারবে কি
না?
উত্তর : সংগম অবস্থায় স্বামী
স্ত্রী একে অপরের লজ্জাস্থানকে
চোষা এবং মুখে নেওয়া সম্পূর্ণ
নিষেধ, এবং মাকরুহ ও গুনাহের
কাজ। এটা কুকুর, গরু, বকরী
ইত্যাদি প্রানীর স্বভাবের মত।
তাই এ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত
থাকতে হবে।
চিন্তা করে দেখুন যে মুখে
পবিত্র কালিীমা পড়া হল, কুরআন
শরীফ তিলাওয়াত করা হয়, দরুদ
শরীফ পড়া হয়, তাকে এমন নিকৃষ্ট
কজে ব্যবহার করতে মন কিভাবে
চায়। তাই এ কাজ মুমিনের কাজ
হতে পারে না। (দেখুন-
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ও
ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া,
আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্ন : দাঁড়িয়ে সহবাস করা
যাবে কি না?
উত্তর : হ্যাঁ, দাঁড়িয়েও সহবাস
করা যাবে। যারা বলে
দাঁড়িয়ে সহবাস করা যায় না
তাদের কথা ঠিক নয়। তাই ঐ
কথায় কান দেয়া যাবে না।
(দেখুন- ইতহাফুস সাদাতিল
মাত্তাকীন, আল কাউসার,
আহকামে জিন্দেগী)